কাউকে কাফির বলে ডাকা – কোনো মুসলিমকে কাফির বলে সম্বোধন করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির

কাউকে কাফির বলে ডাকা – কোনো মুসলিমকে কাফির বলে সম্বোধন করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির এর গবেষনা মুলক প্রবন্ধটি পড়া শেষ হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।

রসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, যদি কেউ তার ভাইকে বলে হে কাফির তবে যে কোনো একজনের দিকে তা ফিরে আসে। (সহীহ বুখারী)

অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে, যে কেউ কাউকে কুফরী নামে ডাকে অথবা বলে আল্লাহর শত্রু অথচ উক্ত ব্যাক্তি তেমনটি নয় তবে এ কথা যে বলবে তার দিকেই ফিরে আসবে। (সহীহ মুসলিম)

অর্থাৎ যাকে কাফির বলা হচ্ছে যদি সে কাফির না হয় তবে যে বলছে তার দিকেই কথাটি ফিরে আসবে।

ইমাম আন নাব্বী রঃ বলেন, আলেমরা এই হাদীসটিকে অস্পষ্ট অর্থ সম্পন্ন হাদীসের মধ্যে গন্য করেছেন যেহেতু এর প্রকাশ্য অর্থ উদ্দেশ্য নয়। কেননা সত্যপন্থী ওলামায়ে কিরামের মত হলো কোনো মুসলিমকে কোনো পাপের কারণে কাফির বলা হবে না। যেমন, হত্যা করা বা যিনা করা ইত্যাদি। একইভাবে যদি কেউ তার মুসলিম ভাইকে কাফির বলে (সেও কাফির হবে না)। যদি না সে এর মাধ্যমে ইসলামকেই ভ্রান্ত বলতে চায়। (শারহে মুসলিম)

ইবনে মুনজির রঃ বলেন, আমি যেসব ওলামায়ে কিরামের মতামত সম্পর্কে জানি তারা সকলে ইজমা করেছেন যে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো মুসলিমকে বলে হে ইয়াহুদী, হে নাসারা তবে তাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হবে কোনো দন্ড (হদ) দেওয়া হবে না। (আল-ইশরাক)

অর্থাৎ তারা কেউই বিষয়টিকে কুফরী মনে করেন নি যেহেতু তেমন মনে করলে তাকে মুরতাদ হিসেবে হত্যার দন্ড (হদ) প্রদান করা হতো।

মোট কথা একজন মুসলিমকে অন্যান্য গালি দেওয়ার মতো তাকে কাফির বলাও একটি মারাত্মক অপরাধ তবে এটা কুফরী নয়। যদি না এর মাধ্যমে ইসলামকেই গাল-মন্দ করা হয়। যেমন, যদি কেউ বলে যারা কা’বা শরীফের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করে বা কা’বাকে ঘিরে তাওয়াফ করে তারা কা’বাকে পূজা করে ফলে তারা কাফির। অথবা বলে ইবলিস আদম আঃ কে সাজদা না করে ঠিকই করেছে যেহেতু আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে সাজদা করা কুফরী ইত্যাদি।

অতএব, যে কোনো মুসলিমকে কাফির বলে সম্বোধন করা যে কোনো অবস্থায় কুফরী হবে উপরের হাদীসটির অর্থ এমন নয়। হাদীসটিতে কুফরী বলতে প্রকৃত কুফরী নয় বরং বিষয়টির ভয়াবহতা বোঝানো হয়েছে। তবে এই হাদীসটি কোনো মুসলিমকে কাফির বলার ভয়ানক পরিনতির প্রমান বহন করে। অনেকে এই হাদীসটি ভুলভাবে উপস্থাপন করে থাকে। বিভিন্নভাবে ইসলামী বিধি-বিধান অস্বীকার ও অপছন্দ করার কারণে যেসব নামধারী মুসলিমরা কার্যত কাফিরে পরিনত হয়েছে তাদের ব্যাপারে কাফির শব্দ প্রয়োগ করা হলে অনেকে সেটার নিন্দা করেন এবং এই হাদীসটি দলিল হিসেবে পেশ করেন। এটি সঠিক কর্মপন্থা নয়। আবার যারা বিভিন্ন ভ্রান্ত অজুহাতে যাকে তাকে কাফির বলে থাকে তাদের এ কাজও সঠিক নয়। বরং কোনো মুসলিমকে কাফির বলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু মূলনীতি মেনে চলতে হবে। এই গ্রন্থের তৃতীয় অধ্যায়ে আমরা সে সকল মূলনীতি সম্পর্কে সুবিস্তারে আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ।

কোনো মুসলিমকে কাফির বলার ব্যাপারে বিস্তারিত কথা হলো এ বিষয়টি কয়েক রকম হতে পারে।

ক. কোনো মুসলিমকে প্রকৃত অর্থেই কাফির ঘোষণা করার জন্য নয় বরং গালি দেওয়ার উদ্দেশ্যে বা তাকে ছোট করার উদ্দেশ্যে কাফির বলা। এ বিষয়টি দু’রকম হতে পারে।

  • যদি উক্ত ব্যক্তি এমন নেককার লোক হয় যাকে কাফির, মুনাফিক, ফাসিক ইত্যাদি শব্দ দ্বারা গালি দেওয়া যায় না তবে এমন ব্যক্তিকে কাফির বলে বা অন্য কোনো ভাষায় গালি দেওয়া কবীরা গোনাহ্ হিসেবে গণ্য হবে এবং এই গালি মূলত যে দিচ্ছে তার দিকেই ফিরে আসবে। অর্থাৎ যে গালি দেয় সেই মূলত এই গালি পাওয়ার যোগ্য হবে। তবে সে কাফির হবে না।
  • আর যদি উক্ত ব্যক্তি জালেম ও পাপাচারী হয় তবে তার পাপ কাজকে অধিক কঠোরভাবে উপস্থাপণের উদ্দেশ্যে ক্ষেত্র বিশেষে তাকে “ভীষণ পাপিষ্ঠ” এই অর্থে কাফির শব্দটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে তাকে প্রকৃত অর্থেই কাফির বলা যাবে না যেহেতু কোনো মুসলিম পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে কাফিরে পরিনত হয় না। জালেম ও পাপী ব্যক্তিকে রুপক অর্থে কাফির বলার বৈধতা পাওয়া যায় ঐ সকল হাদীসে যেখানে বিভিন্ন পাপ কাজকে কুফরী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আমরা তার কিছু অংশ পূর্বের পোষ্ট সমূহতে উল্লেখ করেছি। আমরা দেখেছি ওলামায়ে কিরাম ঐ সকল হাদীসে কুফরী বলতে প্রকৃত অর্থে কুফরী বোঝেন নি। তারা বলেছেন, পাপ কাজের প্রতি অধিক কঠোরতা আরোপ করার জন্য কুফরী শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। একইভাবে ঐসকল কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের রুপক অর্থে কাফির বলা যায়। কোনো মজলুম জালেমকে গালি হিসেবে এটা বলতে পারে। যেমন কেউ হয়তো অন্য কারো সম্পদ ছিনিয়ে নিল বা কারো সন্তান হত্যা করলো ফলে মজলুম তাকে ইয়াহুদী-খৃষ্টান বা বেদ্বীন বলে গালি-গালাজ করলো এতে তার কোনো পাপ হবে না। বরং এই কথাগুলো জালেমের বিপক্ষে বদ-দোয়া হিসেবে আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে। কারণ সে নিজ কর্মের মাধ্যমে এসব গালি-গালাজের যোগ্য হয়েছে। একইভাবে কোনো বক্তা মুসলিমদের সতর্ক করার জন্য উপদেশ হিসেবে এমন বলতে পারেন। যেমন, তিনি হয়তো বললেন, যে ব্যক্তি সলাত পড়ে না সে কাফির, যে সারা বিশ্বে ভ্রমণ করে কিন্তু হজ্জ করে না যে মুসলিম নয়, যে যাকাত আদায় না করে যাত্রা পালায় অর্থ যোগান দেয় সে মুমিন নয় ইত্যাদি। এখানে তার উদ্দেশ্য হবে এসব কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের সতর্ক করা প্রকৃত অর্থেই কাফির ঘোষণা করা নয়।

খ. কোনো মুসলিমকে প্রকৃত অর্থেই কাফির বলা। এ বিষয়টি কয়েকরকম হতে পারে।

  • একজন মুসলিম ইসলাম গ্রহণের পর এমন কোনো কাজ করলো যাতে ঈমান ভঙ্গ হয়। যেমন মূর্তির উদ্দেশ্যে সাজদা করলো বা আল্লাহ্ প্রদত্ত বিধি-বিধান ও আইন কানুনকে অযোগ্য ঘোষণা করলো ইত্যাদি। তবে এই ব্যক্তিকে কাফির বলা ফরজ। বরং এই ব্যক্তিকে কাফির না বললে ক্ষেত্র বিশেষে যে কাফির বলবে না তার কাফির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা যার কাফির হওয়া পবিত্র কুরআন ও রাসুলের সুন্নাত হতে প্রমাণিত এবং উম্মতের ইজমার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত তাকে কাফির না বলা অর্থ আল্লাহর বিধানকেই অস্বীকার করা যা নিজেই একটি কুফরী।

কাজি ইয়াদ রঃ বলেন, একই কারণে আমরা কাফির বলবো যারা ইসলামে বিপরীত অন্য ধর্ম ও মতের লোকদের কাফির বলে না বা তাদের ব্যাপারে নিরাবতা অবলম্বন করে বা সন্দেহ প্রকাশ করে বা তাদের মতকে সঠিক বলে। (আশ-শিফা)

যেসব কাজ করলে একজন ব্যক্তি কাফিরে পরিনত হয় স্পষ্টভাবে ঐ সকল কাজে লিপ্ত হওয়ার পরও কোনো ব্যক্তিকে কাফির বলা যাবে না এটা সঠিক নয়। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর হাদীস “যে কেউ কোনা মুসলিমকে কাফির বলে সেটা তার দিকেই ফিরে আসে” এটা এই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যাকে কাফির বলা হচ্ছে যদি সে কাফির না হয় তাহলে কথাটি যে বলেছে তার দিকে ফিরে আসবে। আর এখানে তো যাকে কাফির বলা হচ্ছে সে প্রকৃতই কাফির।

  • যদি কেউ এমন কোনো বিষয়কে কুফরী মনে করে যেটা আসলে কুফরী নয় এবং তার উপর নির্ভর করে অন্য কোনো মুসলিমকে কাফির বলে তবে তার ব্যাপারটি দুরকম হতে পারে।

এক. সে যে বিষয়টিকে কুফরী মনে করছে উক্ত বিষয়টি কুফরী না হওয়ার ব্যাপারে যদি উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং এ বিষয়ে সর্ব শ্রেণীর মুসলিমদের মাঝে ব্যাপক প্রচার প্রসার থাকে তবে উক্ত ব্যক্তি কাফির হবে কারণ সে কুরআন-হাদীসের আলোকে ও উম্মতের ইজমার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বজন বিদিত একটি বিধানকে অস্বীকার করেছে। আর আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, এ ধরনের বিধান অস্বীকার করা কুফরী।

দুই. যদি উক্ত বিষয়টি কুফরী কিনা সে ব্যাপারে দ্বিমত থাকে বা উক্ত বিষয়টি কুফরী না হওয়ার ব্যাপারে ইজমা প্রতিষ্ঠিত হলেও সেটার যথেষ্ট প্রচার-প্রসার  না থাকে তবে এমন বিষয়ের উপর নির্ভর করে মুসলিমদের কাফির ঘোষণা করা বিদয়াত হবে কারণ আমরা পূর্বেই বলেছি, ওলামায়ে কিরামের নিকট সর্বস্বীকৃত মূলনীতি হলো, কোনো সন্দেহজনক বিষয়ের উপর নির্ভর করে তারা কোনো মুসলিমকে কাফির বলতেন না। যে কথার বিভিন্ন অর্থ আছে বা যে বিষয়ে আলেমদের মাঝে দ্বিমত আছে তার উপর নির্ভর করে তারা কাউকে কাফির ঘোষণা করতেন না। সুতরাং আলেমদের মতামত উপেক্ষা করে এই ধরণের বিষয়ের উপর নির্ভর করে মুসলিমদের কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করা সঠিক পন্থা নয়। যে বিষয়ে আলেমদের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে তা কুফরী নয় কিন্তু সেটার প্রচার প্রসার নেই এমন বিষয়ের উপর নির্ভর করে মুসলিমদের কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করা প্রথমটি অপেক্ষা বড় বিদয়াত। কারণ অন্য কাউকে কাফির বলার পূর্বে যিনি কাফির বলছেন তাকে অবশ্যই এ বিষয়ে যথেষ্ঠ পরিমান জ্ঞান অর্জন করা উচিৎ ছিল। সামান্য পড়াশোনা করলেই তিনি জানতে পারতেন যে, তার মতের বিপরীতে আলেমদের ইজমা সম্পাদিত হয়েছে। কিন্তু তিনি তা করেন নি।

  • যদি কেউ কোনো মুসলিমের ব্যাপারে কুফরীতে লিপ্ত হওয়ার মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়। এবং এর মাধ্যমে তাকে কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করে। যেমন, সে হয়তো বলল, আমি দেখেছি অমুক মূর্তি পূজা করেছে বা আমি শুনেছি অমুক বলেছে আমি ইয়াহুদী অথচ উক্ত ব্যক্তি একাজ করেনি এবং এ কথা বলেনি তবে এই ব্যক্তি মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে অপরাধী হবে কিন্তু কাফির হবে না।

মোল্লা আলী ক্বারী রঃ উল্লেখ করেন, যদি কেউ কোনো হারামকে হালাল বলে বিশ্বাস করে বা কোনো হালালকে হারাম মনে করে সে কাফির হবে। তবে যে নিজের পন্য বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে হারাম জিনিসকে হালাল বলে চালায় (সেমন, শুকরের মাংস গরু-ছাগলের মাংস হিসেবে বিক্রয় করে) সে কাফির হবে না। (শারহে ফিকহে আকবার)

এই ব্যক্তি কাফির না হওয়ার কারণ সে শুকরের মাংসকে হালাল বলছে না বরং শুকরের মাংসকে গরু বা ছাগলের মাংস হিসেবে বিক্রি করছে এবং বলছে এটা হালাল। অর্থাৎ সে আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করছে না বরং একটি মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিচ্ছে একারণে সে কাফির হবে না তবে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে অপরাধী হবে।

  • যদি কোনো যোগ্য মুফতী বা কাজি (বিচারক) কোনো একজন ব্যক্তির ব্যাপারে সুক্ষ্ম ও নিরপেক্ষ ইজতিহাদ বা গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, সে কাফির। ফলে তাকে কাফির ফতোয়া দেন কিন্তু বাস্তবে সে কাফির না হয় তবে উক্ত মুফতী বা বিচারক আল্লাহর দরবাবে ধরাসয়ী হবেন না। যেহেতু রাসুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন কোনো বিচারক বিচার করে এবং চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয় আর সে সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণিত হয় তবে তার জন্য দুটি সওয়াব আর যদি তার সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয় তবে তার জন্য একটি সওয়াব। (বুখারী ও মুসলিম)

সহীহ্ বুখারীতে বর্ণিত আছে উমর রাঃ বলেন, এখন ওহীর যুগ শেষ হয়ে গেছে এখন আমরা তোমাদের বহ্যিক কার্যাবলী অনুযায়ী বিচার করবো। একজন বিচারক বাইরের বিষয়াবলীর উপর চিন্তা-গবেষণা করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তিনি যতটা সম্ভব নির্ভূল রায় দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারপরও যদি তার রায় বাস্তবে ভুল প্রমাণিত হয় তবে তার কারণে তাকে পাকড়াও করা হবে না। এমন না হলে কোনো বিচারকই আল্লাহর দরবারে মুক্তি পেতেন না। যেহেতু মানুষ মাত্রই ভুলের উর্দ্ধে নয়।

এই মূলনীতির উপর দৃষ্টি রেখে আমরা বলবো যদি উপযুক্ত স্বাক্ষ্য-প্রমাণে এবং অবস্থা পর্যবেক্ষণ   করে কোনো মুফতী বা কাজির নিকট স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে অমুক ব্যক্তি কুফরী করেছে তবে তিনি তাকে কাফির ঘোষনা করতে পারেন। যদি বাস্তবে এমন হয় যে, উক্ত ব্যক্তি আসলে কাফির ছিল না তবে আল্লাহ্ উভয়কে ক্ষমা করবেন ইনশা-আল্লাহ। উদাহরণস্বরুপ যদি একজন ব্যক্তি মারা যায় আর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সাক্ষ্য দিচ্ছে তাদের বাহ্যিক অবস্থা সন্তোষজনক মনে হয় তবে বিচারক তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন ফলে উক্ত মৃত ব্যক্তির জানাজার সলাত হবে না, তাকে মুসলিমদের কবরে দাফন করা হবে না, তার মৃত্যুর পর হতে কিয়ামত পর্য্ন্ত তার জন্য কোনো মুসলিম দোয়া করবে না ইত্যাদি। যদি বাস্তবে এমন হয় যে, উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে যারা স্বাক্ষ্য দিয়েছে তারা মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়েছে বা তারা তার কথা বুঝতে ভুল করেছে তাহলে আল্লাহর নিকট উক্ত ব্যক্তি মুসলিম হিসেবেই গণ্য হবে কিন্তু এই বিচারক এ বিষয়ে পাকড়াও হবেন না যেহেতু তিনি গায়েবের বিষয়ে জানে না। যারা শরীয়তের বিধি-বিধান অকার্য্কর করে ফেলতে চায় তারা এসব সন্দেহ-সংশয়কে সামনে উপস্থাপন করে যে কাউকে কাফির বলা হতে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে সঠিক পন্থা হলো, একজন ব্যক্তির বাহ্যিক আমল-আখলাকের মাধ্যমে যদি কুফরীর পরিচয় ফুটে ওঠে এবং ভিন্ন কোনো সম্ভাবনা ও সুযোগ দেখা না যায় তবে তাকে কাফির ঘোষণা করতে হবে এবং দুনিয়ার যাবতীয় বিধানে তার সাথে কাফিরের মতোই আচরণ করা হবে। এটিই আমাদের কাজ। যদি সে বাস্তবে কাফির না হয়ে থাকে তবে আল্লাহ্ তার প্রতিদান দেবেন কিন্তু আমাদের শাস্তি দেবেন না। যেহেতু আমরা তার ভিতরের খবর রাখি না। বিষয়টি নিয়ে অনেকে গোলমাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। তাই বিষয়টি আমাদের স্পষ্ট বুঝে নিতে হবে। গ। যদি কেউ কোনো মুসলিমকে মুসলিম হওয়ার কারণে বা ইসলাম মেনে চলার কারণে কাফির হিসেবে আখ্যায়িত করে যেমন, বলে, যারা কা’বা শরীফে হজ্জ করতে যায় এবং হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে এরা কা’বা ঘর ও হাজরে আসওয়াদের পূজা করে তবে এই ব্যক্তি কাফির হবে সে প্রকৃত কুফরী উদ্দেশ্য করুক বা খেল-তামাশার ছলে এমন বলুক। কারণ ইসলাম নিয়ে তামাশা করাও কুফরী।

কাউকে কাফির বলে ডাকা – কোনো মুসলিমকে কাফির বলে সম্বোধন করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির এর গবেষনা মুলক প্রবন্ধটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

কিওয়ার্ড: কাউকে কাফির বলে ডাকা কাউকে কাফির বলে ডাকা কাউকে কাফির বলে ডাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *