সাহাবায়ে কিরামকে গালমন্দ করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির

সাহাবায়ে কিরামকে গালমন্দ করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির এর প্রবন্ধটি পড়া শেষ হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

সাধারনভাবে উম্মতের ওলামায়ে কিরাম ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, নবী-রাসুল বা ফেরেস্তা ছাড়া অন্য কাউকে গালি দেওয়া মারাত্মক অপরাধ হলেও কুফরী নয়। তবে কারো কারো মতে সাহাবায়ে কিরামকে গাল-মন্দ করার বিষয়টি ব্যতিক্রম। বিশেষভাবে শাইখাইন তথা আবু বকর রাঃ ও উমর রাঃ কে গালি দেওয়াকে হানাফী মাযহাবের বিভিন্ন ফিকাহ্ গ্রন্থে কুফরী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বাহরুর রায়েকে অন্যান্য বিভিন্ন কিতাব যেমন, আল-খুলাসা, আল-বাজ্জারিয়্যা, আল-জাওহারা ইত্যাদি গ্রন্থের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে,

যদি কেউ আবু বকর রাঃ ও উমর রাঃ কে গালি দেয় বা তাদের নিন্দা করে তবে তাকে কাফির বলা হবে।

আদ্দুররুল মুখতার নামক গ্রন্থে উপরোক্ত মতটি উল্লেখের পর বলা হয়েছে, হানাফী মাজহাবে গ্রহণযোগ্য রায় এটিই।

তবে ইবনে আবেদীন রঃ রদ্দুল মুহতারে বলেন,

হযরত আবু বকর রাঃ ও উমর রাঃ কে যে ব্যক্তি গাল-মন্দ করে তাকে কাফির বলার ফতোয়াটি অস্পষ্ট। যেহেতু আল-ইখতিয়ারে (একটি গন্থ) রয়েছে আলেমরা একমত হয়েছেন যে, যতগুলোবিদয়াতী ফিরকা আছে তারা পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আর যে ব্যক্তি সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে যে কাউকে গাল-মন্দ করে বা ঘৃণা করে সে কাফির হবে না তবে গোমরাহ্ হবে।

এরপর তিনি বলেন, ফাতহুল কাদীরে উল্লেখ আছে যেসব খারেজীরা মুসলিমদের হত্যা করতো তাদের সম্পদ লুন্ঠন করতো এবং সাহাবায়ে কিরামকে কাফির বলতো জমহুর (বেশির ভাগ) ফুকাহায়ে কিরাম ও মুহাদ্দিসগণ তাদের বিদ্রোহী বলেছেন (কাফির বলেন নি)।

শাফেঈ মাজহাবের ওলামায়ে কিরামের মাঝেও এ বিষয়ে দ্বিমত আছে। তাদের কেউ কেউ হযরত আবু বকর ও উমর রাঃ এর সাথে উসমান ও আলী রাঃ কে গালি দেওয়াও কুফরী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শাফেঈ মাজহাবের আলেম ইবনে হাযার আল-হাইতামী রঃ আল-ই’লাম বি কওয়াতিইল ইসলাম নামক গ্রন্থে এ বিষয়ে শাফেঈ মাজহাবের ওলামায়ে কিরামের মধ্যে দ্বিমত উল্লেখ করার পর ইমাম বাগাবী রঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন,

যে কেউ আবু বকর রাঃ কে খিলাফতকে অস্বীকার করে সে বিদয়াতী হবে কাফির নয়। আর যে কেউ কোনো একজন সাহাবাকে গাল-মন্দ করে কিন্তু সে এটা বৈধ মনে না করে তবে সে ফাসিক হবে।

ইবনে হাযার হাইতামী রঃ আরো উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম সুবাকী রঃ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবার যে কাউকে গাল-মন্দ কুফরী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে এটা তার নিজস্ব মত। মোট কথা, হানাফী ও শাফেঈ মাযহাবের কিছু আলেমের নিকট প্রথম দুই খলীফা অন্য আরেদল আলেমের মতে চার খলিফা বা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ খলিপার যে কাউকে গাল-মন্দ করা কুফরী মনে করেন নি। এটিই সঠিক মত। কেননা যদি কোনো সাহাবাকে গাল-মন্দ করা কুফরী হতো তবে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা রাঃ কে যারা অপবাদ দিয়েছিল তারাই প্রথম কাফির হতো। তাছাড়া উমায়্যা শাসন আমলে বিভিন্ন শাসকের নির্দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে আলী রাঃ কে গাল-মন্দ করা হতো। যারা এটা করতো তাদের কেউ কাফির বলেন নি।

সাহাবায়ে কিরামকে গালমন্দ করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির প্রবন্ধটি আপনার বন্ধুদের নিকট শেয়ার করুন।

One thought on “সাহাবায়ে কিরামকে গালমন্দ করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির

  • January 3, 2023 at 12:55 pm
    Permalink

    আল্লাহ তালা শায়েখ আব্দুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহর ইলমে বারকাহ দান করুণ।।।। আমিন।।।।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *