শাবানের রাতের বিশেষ সলাত – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর

শাবানের রাতের বিশেষ সলাত – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর এর লায়লাতুল বারায়াত গ্রন্থ হতে হুবহু তুলে ধরা হয়েছে এছাড়াও শায়েখের অন্যান্য গ্রন্থ পাবেন আমাদের সাইটে

এ রাতের কেউ কেউ ১০০ রাকাত সলাত পড়ে থাকেন যার প্রতি রাকাতে ১০ বার সূরা ইখলাস পড়ে থাকেন। ইমাম ইবনে তাইমিয়া হতে আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে তিনি এধরনের সলাতকে বিদআত বলেছেন। এই সলাতকে সমস্ত আলেমরাই বিদআত বলেছেন। ইমাম নাব্বী বলেন,

রজব মাসের প্রথম জুমআর রাতে “সলাতুল রাগাইব” নামে যে ১২ রাকাত সলাত আদায় করা হয় আর শাবান মাসের মাঝ রাতে যে ১০০ রাকাত সলাত পড়া হয় এই দুটি সলাত খুবই নিকৃষ্ট বিদআত। কু-তুল কুলুব ও ইহইয়াউ উলুমিদ্দীনে এই দুটি সলাতের কথা উল্লেখ থাকতে দেখে যেনো কেউ ধোকায় না পড়ে। এ সম্পর্কে যেসব হাদীস বর্ণিত আছে তাতেও যেনো কেউ ধোকায় না পড়ে কেননা এসবই বাতিল। কোনো কোনো আলিম যারা এ বিষয়ে সঠিক মত অবহিত হতে পারেন নি তারা এটি মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে বইও লিখেছেন সেসবেও যেনো কেউ দৃষ্টি না দেয়। কেননা এ হলো ভুল মত এ বিষয়ে শায়খ আবু মুহাম্মদ আব্দুর রহমান আল মাকদিসী খুব সুন্দর একটি কিতাব রচনা করেছেন। তাতে তিনি এই দুটি সলাতকে বাতিল প্রমাণ করেছেন এবং উত্তমভাবেই তা করেছেন। আল্লাহ তার উপর দয়া করুন। (আল-মাজমু)

ইমাম আল-শাওকানী “আল ফাওয়াইদ আল মাজমুআ” নামক গ্রন্থে এই সলাত সম্পর্কিত রেওয়ায়েত গুলো উল্লেখ করেছেন এবং মাওযু বলেছেন। পরিশেষে তিনি বলেন,

শাবান মাসের সলাত সম্পর্কে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যার প্রতিটি মাওযু এবং বাতিল। এটা তিরমিযীর ঐ হাদীসের বিপক্ষে নয় যেখানে বলা হয়েছে রসুলুল্লাহ সাঃ বাকি কবরস্থানে গমন করেছিলেন, বা আল্লাহ তায়ালা শাবান মাসের মাঝ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং কালব গোত্রের ছাগলের পশমের সমপরিমান লোককে ক্ষমা করেন। আমরা কেবল এই রাতের এই বাতিল সলাতটি সম্পর্কে (১০০ রাকাত এবং প্রতি রাকাতে ১০০ বার সূরা ইখলাস পড়া) কথা বলছি।

মোল্লাহ আলী কারী এ বিষয়ে লম্বা কথা বলেছেন, যাতে তিনি এই সলাতকে বাতিল প্রমাণিত করেছেন, তিনি ইমাম নাব্বীর অনুরুপ কথা বলেছেন তবে এই সলাত কারা প্রথম আবিষ্কার করে, তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল তিনি সে বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, একদল আলেম নিজেদের বৈষয়িক সার্থে এ সলাতের প্রচলন করে এবং আম জনতা তাদের জালে আটকা পড়ে। একথা বলার পর তিনি বলেন, সওম তবে পরবর্তীতে সত্যপন্থী আলেমরা এটার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হলে তার গুরুত্ব কমে যায়। (মিরকাতুল মাফতীহ) ফল-কথা হলো শাবান মাসের মাঝ রাতে নির্দিষ্ট কোনো সলাত নেই। নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা নির্দিষ্ট সংখক রাকাত হিসাবে সলাত পড়া বিদআত। কিন্তু এ রাতের ফজীলত সহীহ সনদে প্রমাণিত। বিধায় এই রাতকে উদ্দেশ্য করে সলাত, সওম বা অন্যান্য ইবাদত করা মুস্তাহাব। সুতরাং আলেমদের উচিত এই রাতে নির্দিষ্ট কোনো সলাত পড়তে কাউকে আদেশ না করা। বরং স্বাভাবিক নিয়মে যে যতটুকু পারে ততটুকু ইবাদত করবে।

শাবানের রাতের বিশেষ সলাত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *