শানে নুযুল – আসবাবে নুযুল বা শানে নুযুল – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর

শানে নুযুল কি – আসবাবে নুযুল বা শানে নুযুল – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর এর মাজহাব বনাম আহলে হাদীস গ্রন্থ হতে হুবহু সংকলন করা হয়েছে প্রবন্ধটি পড়ুন এবং আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন

নাযিলের দিক হতে কোরআনের আয়াত সমূহ দুই প্রকার। (ক) কিছু কিছু আয়াত কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে। (খ) কিছু আয়াত কোনো ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা ছাড়ায় নাযিল হয়েছে। যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো আয়াত নাযিল হয় উক্ত ঘটনাকে ঐ আয়াতের শানে-নুযুল বা আসবাবে নুযুল বলা হয়। কোরআনের কোনো আয়াতের সঠিক মর্মার্থ অনুধাবনের জন্য উক্ত আয়াতের শানে নুযুল সম্পর্কে অবহিত থাকা জরুরী। জালালুদ্দীন সুয়ুতী রঃ বলেন,

আল-ওয়াহিদী বলেছেন কোনো আয়াতের নাযিল হওয়ার কারণ এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট ঘটনা না জেনে তার তাফসীর করা সম্ভব নয়।

ইবনে কাদীকিল ঈদ বলেন, কোরআনের সঠিক অর্থ জানার ক্ষেত্রে শানে-নুযুল বর্ণনা করা খুবই শক্ত একটি পদ্ধতি। (আল ইতকান)

ইমাম ইবনে তাইমিয়া রঃ বলেন, কোনো আয়াত কোন ঘটনা প্রসঙ্গে নাযিল হলো এটা জানা থাকলে আয়াতটির অর্থ বোঝা সহজ হয় কেননা কোনো কিছুর কারণ সম্পর্কে জানলে মূল বিষয়টি সম্পর্কে জানার পথ খুলে যায়। (মাজমুয়ায়ে ফতওয়া)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করো আর নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না। (সুরা বাকারা-১৯৫)

বেশ কিছু সাহাবা অন্যান্য মুজাহিদদের সাথে নিয়ে রোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হলে একজন ব্যক্তি শত্রুর ভিতর প্রবেশ করে দুঃসাহসের সাথে যুদ্ধ করছিল। লোকেরা তাকে বলছিল, থামো, থামো…. এই ব্যক্তি দেখি নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করছে। তারা উপরে উল্লেখিত আয়াতটিকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিজেকে বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করা অবৈধ হওয়ার ব্যাপারে দলীল মনে করছিল। তখন আবু আয়্যুব আল আনসারী রাঃ বললেন,

আমরা যারা আনসার তাদের ব্যাপারেই আয়াতটি নাযিল হয়েছে। যখন আল্লাহ তার নবীকে বিজয় দিলেন এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করলেন তখন আমরা বললাম, (এখন আমরা আমাদের সহায় সম্পদ দেখাশুনা করার দিকে মনযোগ দেবো। তখন আল্লাহ তায়ালা নাযিল করেন “তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করো আর নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না।” (আবু দাউদ আল বানী সহীহ বলেছেন)

দেখা যাচ্ছে শানে-নুযুল জানা না থাকার কারণে একদল লোক আয়াতটিকে সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে ব্যাবহার করছিলো। কিন্তু শানে-নুযুল সম্পর্কে জানার পরই আয়াতটির প্রকৃত অর্থ প্রকাশিত হয়ে পড়লো। সুতরাং একজন গবেষককে কোরআনের আয়াতের অর্থ সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণার সময় অবশ্যই উক্ত আয়াতটির শানে-নুযুল সম্পর্কে জানতে হবে।

শানে নুযুল কি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *