নকল দা’ওয়াত – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর – ইসলামীক কবিতা
নকল দা’ওয়াত – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
সারি সারি লোক বাড়ি বাড়ি যায় দ্বীনের দা’ওয়াত নিয়ে।
নবী ওয়ালা কাজ চলিছে আজ শহর থেকে গায়ে।
সমজিদে এসে গোল হয়ে বসে ঈমানের কথা বলে।
কারামতি আর কারগুজারী বায়ানের মাঝে চলে।
অশ্রু জলে কেদে কেদে বলে দ্বীনের দা’ওয়াত দিতে
কত যে কষ্ট সয়েছেন নবী কাফির লোকের হাতে।
তায়েফের দিনে আশাহত মনে আসছেন যবে ফিরে
দুষ্টু কাফিরে আঘাত করে পাথর ছুড়ে মেরে।
মাক্কী জীবনে সাহাবীগণে খেয়েছে যে কত মার!
মনীবের হাতে কষ্ট পেয়েছে বেলাল আর আম্মার।
মদীনায় এসে মুজাহিদ বেশে যুদ্ধ করেছে সবে।
তরবারী হাতে কাফিরের সাথে মুকাবিলা করে ভবে।
কত যে সাহাবী শহীদ হলো আরও কত হলো গাজী।
দ্বীনের কারণে মরনেও তারা হাসি মুখে ছিল রাজী।
সেই সে দাওয়াত এই জামানায় আবার এলো ফিরে
কেমন ভাবে তোমরা সবে থাকবে বলো দূরে।
নবী নেই আজ তাই তার কাজ মোদের করতে হবে
দাওয়াতের ভার কেয়ামত অবধি আমাদের পরে রবে।
বাড়ি ঘর ছেড়ে মসজিদে যেয়ে রাতদিন থাকে পড়ে
সঠিক নিয়মে সময় লাগায় সঠিক হিসাব করে।
আইন করে লাইন ধরে রাস্তা ঘাটে হাটে
দাওয়াতের দায় আদায় করতে এদিক সেদিক ছোটে।
তাদের মতে তাদের পথে দাওয়াত যারা দেয়
নবী ওয়ালা কাজ সেই করে শুধু অন্য কেউ নয়।
চিল্লা দিলে মুর্খ হলেও সেই যেনো অতি জ্ঞানী।
এলেম থেকেও আলেম নয়কো চিল্ল দেয়নি যিনি।
চিল্লা ছাড়া আর সব কাজ গোল্লায় যাবে যেনো।
চিল্লা না দিলে তাদের কাছে মূল্য পাবে না কোনো।
মসজিদে বসে তালিম করে নিজেদের বই পড়ে
তালিম হবে না ভিন্ন কোনো হাদীস আর তাফসীরে।
এমন গোড়ামী দাওয়াতের নামে বিদআতের পরিচয়
আসল হলো দ্বীনের দাওয়াত যে কোনো পন্থায়।
নিজের মতে নিজেদের পথে যে বা যারা চলে
নেককার অতি সৎ ব্যক্তি তাকেই তারা বলে।
নামাজ পড়ো তাবলীগ করো এতেই সব শেষ
আছে অন্য পাপে লিপ্ত থাকার মুক্ত পরিবেশ।
সুদী মহাজন চিল্লায় গিয়ে সুদের হিসাব কসে
তারা সবে নিরব থাকে তারই পাশে বসে।
ব্যাংক অফিসার অবসর পেলে চিল্লায় যদি যায়
সুদের নিন্দা তার সামনে একবারও নাহি কয়।
হারাম চাকরী ছাড়ার কথা বলেনাকো কোনো দিন।
বিনয়ের সাথে এটাও বলে না তওবা করে নিন।
উল্টো তারা গর্ব করে নামটি ধরে তার
এই যে দেখো তাবলীগ করে ব্যাংকের ম্যানেজার।
জজ বা উকিল কুটিল পথে মানুষের টাকা মারে
আল্লাহ বিরোধী আইনে তারা সদাই বিচার করে।
এমন ব্যক্তি সারাটা জীবন চিল্লা যদি দেয়।
চিল্লার লোকে হারাম থেকে নিষেধ করে না ভাই।
উল্টো বলে গর্ব করে সবাই দেখো এসে
এই তাবলীগে মোদের সাথে গুনি লোকও আসে।
ধুমপানে যার অভ্যাস আছে গোপন বসে টানে।
চিল্লার আমীর আপন হাতে তাকে দেয় বিড়ি কিনে।
চিল্লা দেওয়ার বরকতে সব পাপ হয়ে যায় মাফ।
পাপের কাজ ছাড়তে তারা দেয় না কোনো চাপ।
এই কারণে দেখবে লোকে ত্রিশ বছর ধরে
চিল্লা দিয়ে বেড়ায় তবু পাপ কাজ নাহি ছাড়ে।
হারাম টাকায় আরাম করে সুদ ঘুষ খেয়ে থাকে
তবুও তারা একটিবারও নিষেধ করে না তাকে
এ কেমন দাওয়াত রে ভাই পাপে নেই বাধা
নামাজ পড়ার কথাই শুধু বলে চলে সদা।
নামাজ ছাড়া ইসলামে কি আর কিছু নেই
সেই বিষয়ে ভুল করে কি দাওয়াত দিতে নেই?
দাওয়াতের পথে নবীরা শুনেছি কষ্ট করেছে খুবই
তাদের পথে যারাই চলেছে একই হয়েছে ছবি।
কিন্তু একি এদের দেখি কাফিরের সাথে ভাব
দাওয়াতে তাদের বাতিলের সাথে গড়ে ওঠে সদ্ভাব।
কাফিরের কাছে পাসপোর্ট নিয়ে কাফিরের দেশে গিয়ে
দ্বিনের দাওয়াত প্রচার করে নিরাপদ বির্ভয়ে।
কাফির লোকে তাদের দেখে খুশি হয় নাকি অতি
স্বাগত জানায় বলে এসো ভাই নেইকো ভীতি।
বিশ্ব জোড়া তাগুত যারা ইসলামে নেই মোটে।
রবের বিধান মানার কথা শুনলেই যায় চটে।
তারাই দেখি তাদের সাথে মোনাজাতে হাত তোলে।
শুনেছি নাকি তাদের চিছে অর্থকড়িও ঢেলে।
কাফির লোকে তাদের দিকে ইশারা করে বলে
এদের পথেই চলো সবে মুক্তি পেতে হলে।
মাথাটা আমার গুলিয়ে আসে হিসাব তো মেলে না।
বার বার গুনি গুনতে গিয়ে ভুল হয় গননা।
নবী ওয়ালা কাজ মেলেনাকো আজ নবীর কাজের সাথে
দাওয়াত দেয় কিভাবে তারা বাতিলের সহমতে।
তবে কি তারা নবীর চেয়ে অনেক বেশি খাটি
পন্থা তাদের আগের চেয়েও পাকা আর পরিপাটি।
এমন যদি না হয় তবে ভুলটা কোথায় হলো
দাওয়াতের পথে নবীরা এতো কষ্ট কেনো পেলো।
যুদ্ধ কেনো করেছে তারা হক বাতিলের মাঝে
এদের মতো অবলা দাওয়াত কেনো পায়নি খুজে
অনেক ভেবে তারপরে আমি সত্যটা খুজে পায়।
এদের দাওয়াত নকল দাওয়াত আসল দাওয়াত নয়।
দাওয়াতের পথে নেই না তারা একটুও ঝুকি কোনো
মাথায় রাখে কথায় তাদের বাতিল রাগে না যেনো।
খুজে খুজে তারা বয়ানের মাঝে এমন কথাই বলে
দুনিয়ার সব বাতিল শক্তি মেনে নেয় খোশ দেলে।
ক্ষমতার লোভে বাতিলের পথে রাজনীতি যারা করে
নিজের দলে টিকে থেকে তাবলীগে এসে ভেড়ে।
রাজনীতি আর দূর্নিতি থেকে নিষেধ করে না তাকে
তাবলীগ করে সকলে তারা সব লীগে থেকে
মসজিদে হয় শয়ন তাদের খাওন দাওন ভালো
কাজের কাজ না হোক কিছু পিকনিক তো হলো।
এমনি ভাবেই এক পাল লোক মাঠে এনে করে জড়
ঘোষনা করে সমাবেশটা হজ্জের পরে বড়।
সেই সমাবেশ লোক যায় আসে কাজ তো হয় না মোটে
তাগুতেও এসে হাজিরা দেয় হাস্যকরই বটে।
নবীর দাওয়াত ছিল কি আর এমনই এক পেশে
সব বিষয়ে হকের কথা বলেন সবার কাছে।
দেখেননিকো কে খুশি হয় কেবা কিসে বেজার
সব বাতিলের ঘাড় ভেঙ্গে হয় দ্বীন ইসলামের প্রচার।
নেতা গোতা সমাজপতি করেননিকো কারো ভীতী
তাইতো অতি চটলো তারা করতে গেলো ক্ষতি।
কত যে কষ্ট করেন নবী সব সাহাবীর সাথে।
তবুও তিনি ছাড় দেননি দ্বীনের দাওয়াত দিতে।
কাফিররা সব তাকে বলে একটুও ছাড় দিলে
এক সাথে থাকবো সবে গলায় গলায় মিলে।
আকাশ থেকে আদেশ করেন সম্মানিত রবে
ছাড় দিয়ো না টিকে থাকো পরিপূর্ণভাবে।
এই কারণে হক বাতিলে আপোস কভু নয়।
হকের পথে দাওয়াত দিলে বাতিল নাখোশ হয়।
সঠিক পথে দাওয়াত হলে লড়াই হবেই হবে
অস্ত্র দিয়ে জিহাদ করে বিজয় তবেই পাবে।
নবীর জীবন তালাশ করো প্রমাণ যদি চাও
সাহাবীদের কাহীনি থেকে শিক্ষা নিয়ে নাও।
সেই সে দাওয়াত বাতিল করে নকল দাওয়াত নিয়ে।
দাওয়াতের নামে বাতিলের পায়ে সাজদা করছে গিয়ে।
রাষ্ট্র নেতার পাপ কাজ নিয়ে কিছুই বলে না।
ভয় ভীতিতে জড় হয়ে বলে রাজনীতি করি না।
রাজনীতি আর বাজনীতি কি নবীর নীতি করো।
রাজা প্রজা সবার ভুলই কুরান দিয়ে ধরো।
এটাই হলো আসল দাওয়াত সাহস হলে এসো
ভয় করলে চুরি হাতে ঘরের মাঝে বসো।
হুশিয়ার তবু নকল দাওয়াত বাজারে ছেড়ো না।
তার পিছনে দিনরাত ঘুরে অকারণে মরো না।
নকল দাওয়াত বিকল করে মহান রবের দ্বীন।
রোজ হাশরে তার বিচারে হিসাবটা কঠিন।
নকল দা’ওয়াত নকল দা’ওয়াত নকল দা’ওয়াত