উপসংহার তাওহীদ আর রহমান – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
উপসংহার তাওহীদ আর রহমান – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর এই বইটি শায়েখের একটি গবেষণা মূলক বই এই বইটির প্রতিটি বিষয় আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়েছে
উপরের আলোচনার সারমর্ম হলো সাধারনভাবে বাধ্য হয়ে কুফরী করা ওজর হিসেবে গণ্য করার ব্যাপারে ওলামায়ে কিরাম একমত হয়েছেন। তবে বাধ্যতার সীমা কি হবে সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক দ্বিমত রয়েছে। বেশিরভাগ আলেম, বড় ধরণের যে কোনো ক্ষতির ভয় থাকলে তাকে বাধ্যতা হিসেবে গণ্য করেছেন। তাদের মতে নিহত হওয়া, অঙ্গ কর্তিত হওয়া, প্রচন্ড প্রহার করা, লম্বা সময় জেলে বন্দি করা ইত্যাদি বিষয় বাধ্যতা হিসেবে গণ্য। কেউ কেউ বলেছেন, কেবল নিজের জীবন নয় বরং সম্পদ ও সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও বাধ্যতা বলে গণ্য হবে। এমনকি অন্যান্য মুসলিমদের নিরাপত্তার স্বার্থকেও কিছু আলেম বাধ্যতা হিসেবে গণ্য করেছেন। তারা শত্রু নিধনের জন্য কৌশল হিসেবে কুফরী কথা উচ্চারণের অনুমতি দিয়েছেন। এর পাশাপাশি ওলামায়ে কিরাম একমত হয়েছেন যে, সাধারন অবস্থায় নিজের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হলেও কুফরী না করাই উত্তম।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের করণীয় হলো, সাধারন মুসলিমদের কুফরীতে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা। বিনিময়ে নিজের জীবন বা সম্পদ পরিত্যাগ করার ব্যাপারে তাদের উদ্বুদ্ধ করা। কিন্তু যখন কেউ বাধ্য হয়ে কুফরী করে তার ব্যাপারে নমনীয় আচরণ করা। যেহেতু সে গ্রহণযোগ্য ওজরের কারণে কুফরী করেছে তাই তাকে কাফির বলা যাবে না। যেসব বিষয় বাধ্যতা বলে গণ্য হওয়া বা না হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত আছে সেগুলোর ব্যাপারেও আমাদের ছাড় দিতে হবে যেহেতু মতপার্থক্যপূর্ণ বিষয়াবলীর উপর নির্ভর করে মুসলিমদের কাফির বলা যায় না। তবে যে কেউ নিজেকে বাধ্য বলে দাবী করলেই সেটা মেনে নেওয়া হবে না বরং সে বাধ্য হয়েছে কিনা তার প্রমাণ থাকতে হবে বা কমপক্ষে পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে তার বাধ্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে হবে।
ইমাম নাব্বী রঃ বলেন, যদি কেউ বলে আমি বাধ্য হয়ে এটা করেছি তবে দেখতে হবে পরিপার্শ্বিক অবস্থা তার কথার স্বপক্ষে প্রমাণ বহন করে কিনা। যদি এমন হয় যে সে কাফিরদের নিকট বন্দি ছিল বা একদল কাফির তকে ঘিরে ছিল আর সে এটা বুঝতে পেরেছিল তবে তাকে কসম করতে বলা হবে এবং তার কথা মেনে নেওয়া হবে। (আর-রাওদা) সুতরাং যে যার মতো বাধ্যতার দাবী করলেই সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। বরং বাধ্যতা সম্পর্কিত মুলনীতির আলোকে এবং পরিবেশ পরিস্থিতির উপর সুক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে েএকজন ব্যক্তি বাধ্য কিনা।
উপসংহার তাওহীদ আর রহমান