ঈমান ভঙ্গের কারণ – ঈমান ভঙ্গের তৃতীয় কারণ (আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল ও তামাশা করা। শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির
ঈমান ভঙ্গের কারণ শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির প্রবন্ধটি পড়া শেষ হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।
একদল মুনাফিক রসুলুল্লাহ সাঃ সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা বলে, আমরা তো তামাশার ছলে এগুলো বলেছি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ, রসুল এবং তার আয়াত নিয়ে তামাশা করছিলে? তোমরা ওযর পেশ করো না, তোমরা তো ঈমান আনার পর কাফিরে পরিনত হয়েছো। (সূরা তাওবা-৬৫)
এ আয়াতে আল্লাহ, তার দ্বীন ও তার রসুল সম্পর্কে তামাশার ছলে কিছু বলা কুফরী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অন্য একটি আয়াতে কাফিরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে,
তোমরা যখন সলাতের জন্য আযান দাও তারা এটাকে তামাশার বিষয় হিসেবে গ্রহণ করে। কারণ তারা নির্বোধ লোক। (সুরা মায়েদা-৫৮)
ইয়াহুদীরা বলতো জিব্রাঈল আঃ আমাদের শত্রু। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
যে কেউ আল্লাহ, জিব্রাঈল বা মিকাঈল ইত্যাদি ফেরেশতা ও তার রাসুলদের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করে আল্লাহ্ ঐ সব কাফিরদের শত্রু। (সুরা বাকারা-৯৮)
অতএব, নবী-রাসুল, কুরআন-হাদীস, ফেরেশতা, জান্নাত-জাহান্নাম, সলাত-সওম, হ্জ্জ-যাকাত ইত্যাদি দ্বীন সম্পর্কিত যে কোনো বিষয় নিয়ে কটুক্তি করা স্পষ্ট কুফরী। এ বিষয়টি কুফরীর একটি মূলনীতি যার উপর উম্মতের ইজমা সম্পাদিত হয়েছে।
কাজী ইয়াদ রঃ বলেন, যে কেউ নবী-রসুলদের অবমাননা করে এবং তাদের ছোট করে বা তাদের কষ্ট দেয় অথবা কোনো নবীকে হত্যা করে বা তার সাথে যুদ্ধ করে সে কাফির হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (আশ-শিফা)
ইমাম ইবনুল আরবী আল-মালিকী রঃ বলেন,
কুফরী কথা তামাশার ছলে মুখে উচ্চারণ করাও কুফরী এ বিষয়ে উম্মতের ওলামায়ে কিরামের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। (আহ্কামুল কুরআন)
ফুকাহায়ে কিরাম তাদের গ্রন্থাবলীতে এ সম্পর্কে বহু উদাহরণ উল্লেখ করেছেন। আমরা সেসব ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। বুঝার সুবিধার্থে আমরা আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে তামাশা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা করার বিষয়টি কয়েকটি শাখা-প্রশাখাতে বিভক্ত করে প্রতিটি বিষয়ে পৃথক পৃথক উদাহরণ পেশ কেরবো।
আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে কোনো অসম্মানজনক শব্দ প্রয়োগ করা বা অসঙ্গত আচরণ করা।
আল্লাহ-রাসুল, ফেরেশতা, জান্নাত জাহান্নাম, সাধারণ বিধি-বিধান ইত্যাদি যে কোনো দ্বীনী বিষয়ে অসম্মানজনক উক্তি বা আচরণ করা কুফরী। যেমন, আল্লাহ্-রাসুল বা ফেরেশতাদের গালি দেওয়া। যেভাবে ইয়াহুদীরা বলেছিল, জিব্রাঈল আঃ আমাদের শত্রু এবং তার উত্তরে আল্লাহ্ বলেছেন বরং আল্লাহই তাদের শত্রু। এভাবে কুরআন ছুড়ে ফেলা বা কোনো নাপাকী দ্বারা পরিবত্র কুরআন লেখা যেমনটি অনেক কবিরাজ করে থাকে। এ ধরণের যে কোনো অসম্মানজনক উক্তি ও আচরণের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনের সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয়কে অবমাননা করা হলে তা কুফরী বলে গণ্য হবে। এ বিষয়টিকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়।
পরবর্তী পোষ্ট – আল্লাহর দ্বীনের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাপারে বিরক্তি, অসন্তোষ বা অস্বীকৃতি প্রকাশ পায় এমন মন্তব্য বা আচরণ করার বিধান।
ঈমান ভঙ্গের কারণ প্রবন্ধটি পড়া শেষ হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।