ইমাম নামের গোলাম – ইসলামীক কবিতা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
ইমাম নামের গোলাম – ইসলামীক কবিতা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর এছাড়াও শায়েখের অন্যান্য গ্রন্থ ও লেকচার পাবেন আমাদের সাইটে
ইমাম নামের গোলাম
শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
বেবাক লোকে মাদ্রাসাতে কুরআন হাদীস শিখে
গোলাম হয়ে থাকে এই সমাজেরই বুকে।
মসজিদে কম বেতনে করে ইমামতি।
অসুবিধে হয়না তাতে, হয় না কোনো ক্ষতি।
উপরি কামাই ঠিক করে নেয় দোয়া দরুদ পড়ে
মিলাদ পড়ে পাপি তাপি সব লোকেরই ঘরে।
মাঝে মাঝে কুরান শেখায় পরের বাড়ি গিয়ে
বেপর্দা বসে থাকে ভীন লোকের মেয়ে।
এসব কাজে মাঝে মাঝে বাজে ইচ্ছা জাগে
পরের বউ নিয়ে ইমাম দূরে যায় ভেগে।
আরও কত শত শত অভিযোগ আছে
সে সবই জানা কথা সব লোকের কাছে।
টাকার দায়ে করে সে কত ফাকিবাজী
হিজিবিজি তাবীজ লিখে করে কবিরাজী।
জনগনের হোটেলে খাবারটা খায় ফ্রী।
টিফিন বাটি সাথে নিয়ে ঘোরে বাড়ি বাড়ি।
লোকে তাকে আপন মনে দা’ওয়াত নাহি করে
কমিটিরা পালা করে চাপিয়ে দেয় ঘাড়ে।
মাঝে মাঝে মসজিদে তর্ক করে লোকে
খাবার তাকে দেবোনাকো মোরা আজ থেকে।
সভাপতি সম্পাদকে একে ওকে ডেকে
তালিকাটা নতুন করে আবার তারা লেখে।
ইমাম তখন বসে থাকে বোবা কালা হয়ে
কেবা কি বলে সেটা মাখেনাকো গায়ে।
সবার খেয়ে সবার নিয়ে চলতে হয় তাকে
কেউ যেনো না চটে সেটা খেয়াল রাখে।
বেতনটাও আদায় করা কষ্ট অতিশয়
মসজিদে সবার কাছে হাত পেতে চায়।
গাজাখোর সুদখোর যে যা টাকা দেয়।
তার জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করে যায়।
এমনি ভাবে জীবন চলে পরের দান খেয়ে
সমাজের লোকের কাছে মাথা থাকে নুয়ে।
হক কথা বলার মতো মন থাকে না তাজা
সারা জীবন করে চলে বাতিলের পূজা।
নেতা গোতা যাতা বলে নিজের মন মতো
তার পক্ষে ফতোয়া দেয় ইমাম শত শত।
কমিটির আদেশ রাখে মাথার উপর তুলে
অবাধ্য হয়না তাদের কভু কোনো ভুলে।
বেশিরভাগ সভাপতি বে-নামাজী হয়
আমল আর আখলাকে মোটে ভাল নয়।
এমন লোকের পায়ের কাছে মাথা গুজে পড়ে
গোলাম হয়ে ইমাম সাহেব দিন পাত করে।
সভাপতি সম্পাদকের যদি কভু দেখে
দুটি হাত উঁচু করে সালাম দেয় তাকে।
নেতা গোতা সমাজপতি যদি থাকে পাশে
ইমাম সাহেব কথা বলে বারে বারে হেসে।
অন্য লোকের দেখে সে হুম হয়ে থাকে।
আগে সালাম দেয় কিনা যাচাই করে দেখে।
কথাটাও পরিমিত গুনে গুনে বলে
পাছে যেনো সম্মানটা যায় না আবার চলে।
জুম্মার দিন ইমাম সাহেব বেশি খেয়াল রাখে
সমাজের নেতা গোতা ঐ দিনই থাকে।
বে-নামাজী লোক যারা সারা মাস কাজা
ঐ দিন মসজিদে তারাই হয় রাজা।
লাট সাহেবের মতো তারা লেট করে এসে
এদিক সেদিক তাকায় যেনো কেউ ডাকে পাশে।
কেউ আবার ভিড়ের মাঝে গলা উঁচু করে
ইমামে তাকে যেনো চিনে নিতে পারে।
ইমাম সাহেব নিজেও তাই চোখ খোলা রাখে।
এদিক ওদিক তাকায় শুধু কথার ফাঁকে ফাঁকে।
যদি দেখে দরজা দিয়ে নেতা গোতা ঢোকে
কাতার ভেঙ্গে সামনে চলে আসতে বলে তাকে।
তখন লোকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে মেরে
সেই নেতাকে নিয়ে চলে প্রথম কাতারে।
আর একটা ধাক্কা দিলেই কাম শেষ হতো
মেম্বারে বসে নেতা ইমাম হয়ে যেতো।
এমনিভাবে ফাসিক লোকে মসজিদে যেয়ে
সম্মান পায় অধিক সৎ লোকের চেয়ে।
এর উপর বড় জুলুম আর কি হতে পারে
কি জবাব দেবে ইমাম রোজ হাশরে!
কোনো ভয় না হয় যেনো তার মনে
যা চায় করে তাই জীবিকার টানে।
রবের কালাম বেঁচে তবে জীবন চালায়
ইমাম নামের গোলাম সবে সৎ লোক নয়।