হানাফী, শাফেঈ ইত্যাদি নামে পরিচয় দেওয়া – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর

হানাফী নামে পরিচয় দেওয়া – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর – মাজহাব বনাম আহলে হাদিস গ্রন্থ হতে হুবহু সংকলন করা হয়েছে একই সাতে অন্যান্য গ্রন্থ পড়তে আমাদের সাইট ভিজিট করুন

কেউ কেউ বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তিনি তোমাদের নাম দিয়েছেন মুসলিম (সুরা হাজ্জ-৭৮)

সুতরাং মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো নামে পরিচয় দেওয়া যাবে না। একজন মুসলিম কেনো নিজেদের হানাফী, শাফেঈ ইত্যাদি নামে পরিচয় দেবে? নিতান্ত সাদামাটাভাবে চিন্তা করার কারণে এমন সংশয় সৃষ্টি হয়। একজন মুসলিম কি কোনো কারণেই নিজেকে অন্য আনসার, মুহাজির ইত্যাদি নামে পরিচয় দেওয়ার রেওয়াজ ছিলো কোনো? এভাবে বদরে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের বদরী বলা হয় কেনো? শীয়া, খারেজী, কাদরীয়্য ইত্যাদি ভ্রন্ত মতবাদের বিপক্ষে সত্যপন্থী ওলামায়ে কিরাম নিজেদের আহলূস সুন্না বা সংক্ষেপে সুন্নী বলে পরিচয় দিয়েছেন কেনো?

একজন ব্যক্তি যখন বলবে আমি মুসলিম তখন প্রশ্ন করা হবে তুমি খারেজী মুসলিম না শীয়া মুসলিম নাকি কাদীয়ানী মুসলিম? তখন সে কি বলবে? সে কি একটি একটি করে বাতিল ফিরকা সমুহের নাম গুনে গুনে বলবে, আমি খারেজী নই, আমি শীয়া নই, আমি কাদিয়ানী নই……? এটাই কি বেশি সঠিক নয় যে সে এমন একটি নাম বলবে যাতে মানুষ এই লম্বা কথাটি সংক্ষেপে বুঝে নিতে পারে? সে যদি বলে আমি সুন্নী তাহলেই তো বোঝাযায় যে, সে শীয়া বা খারেজী নয়। এই বিষয়গুলোতে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা গবেষণা করতে হবে। একজন ব্যক্তিকে যদি বলা হয় তুমি কিভাবে সলাত আদায় করো তবে সে সলাতের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু নিয়ম পদ্ধতি সেগুলো একের পর এক গণনা করার পরিবর্তে যদি বলে আমি হানাফী মাযহাব মতে সলাত পড়ি তবে ক্ষতি কিসে? পরিচয়ের সময় একজন মুসলিম নিজেকে আমেরিকান বা জাপানী বলে পরিচয় দিতে পারলে হানাফী বা শাফেঈ বলে পরিচয় দিতে পরবে না কেনো? মুসলিমদের মধ্যে একাধিক নাম একাধিক পরিচয় থাকা দলাদলি নয় বরং যে কোনো নামের উপর ভিত্তি করে সংঘাত ও সংঘর্ষে  লিপ্ত হলে সেটা অবৈধ দলাদলি বলে গণ্য হবে। এবার একজন আনসার ও একজন মুহাজির সাহাবী একে অপরের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আনসার সাহাবী বলে হে আনসাররা আর মুহাজির সাহাবী বলে হে মুহাজিররা। তাদের ডাকে আনসার ও মুহাজিররা একত্রিত হয় এবং ভীষণ অঘটন ঘটে যাওয়ার মতো অবস্থায় হয় তখন রসুলুল্লাহ সাঃ বের হয়ে এসে বলেন,

কি ব্যাপার! জাহেলী যুগের ডাক কেনো? (সহীহ বুখারী)

দেখা যাচ্ছে মুহাজির ও আনসারের মতো দুটি পবিত্র নাম যখন মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যাবহার করা হবে তখন এটাকে জাহেলী ডাক বলা হবে কিন্তু একজন মুসলিম নিজেকে মুহাজির বা আনসার হিসাবে পরিচয় দিলে সেটা সমস্যা নয় কেননা এই ঘটনার আগে বা পরে কখনই মুহাজির ও আনসার পরিচয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি। অজ্ঞ লোকেরাই কেবল যে কোনো নাম ব্যাবহার করাকে দলাদলি মনে করে। এই বিষয়টি বুঝে নেওয়ার পর আমাদের জানতে হবে যে যারা চার মাযহাবের উপর আপত্তি অভিযোগ উপস্থাপণ করে সাধারন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছাড়াচ্ছেন তারা নিজেদের আহলে হাদীস বা সালাফী বলে পরিচয় দিলেও মূলত তারা কোরআন-হাদীসের সঠিক বুঝ ও সালফে সালেহীনদের পথ হতে বহু দূরে অবস্থান করছেন।

হানাফী নামে পরিচয় দেওয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *