সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ বৈধ মনে করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ বৈধ মনে করা – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর এর মাজহাব বনাম আহলে হাদীস গ্রন্থ হতে হুবহু সংকলন করা হয়েছে
তাকলীদ (تقلید ) অর্থ কোনো মাসয়ালাতে নিজে দলীল না জেনে কোনো বিশ্বস্ত আলেমের কথা অনুযায়ী আমল করা। কিছু অজ্ঞ লোক বলে থাকে তাকলীদ অর্থ অন্ধ আনুগত্য। আমি যে বিষয়ে জানি না সে বিষয়ে একজন আস্থাভাজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির কথা মেনে চলাকে কিভাবে অন্ধ আনুগত্য বলা যেতে পারে! রোগী ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে, এটাকে কি অন্ধ আনুগত্য বলা যায়! অন্ধ আনুগত্য তো তখন বলা যাবে যখন অভিজ্ঞ ডাক্তারকে পরিত্যাগ করে গ্রাম্য কবিরাজের নিকট চিকিৎসা নেওয়া হবে। কোরআন-হাদীস হতে জ্ঞান অর্জন করতে হলে যেসব যোগ্যতার কথা আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি সেগুলোর আলোকে চিন্তা গবেষণা করলে এ বিষয়টি স্পষ্ট হবে যে সকল মুসলিম কোরআন-হাদীস হতে সরাসরি জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম নন। কিন্তু মুসলিম হওয়ার পর হতেই দৈনন্দিন জীবনে তাদের সলাত, সওম, ইত্যাদি ইবাদত পালন করতে হয়। যদি কোনো আলেমের ফতওয়া বা মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করা হারাম হিসাবে গণ্য হয় তাহলে এই ব্যক্তি কি করবে? প্রকৃতপক্ষে অজ্ঞ ও পথভ্রষ্ট লোকেরাই এই ধরণের কথা বলে থাকে। তারা আল্লাহর কোরআনের এমন কিছু আয়াত পেশ করে থাকে যেগুলোর সঠিক অর্থ সম্পর্কে তারা অবগত নয়। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
যখন তাদের বলা হয় আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার অনুসরণ করো তখন তারা বলে আমরা তো কেবল সেই জিনিসের অনুসরণ করবো যার উপর আমাদের বাপ দাদারা ছিলো। আপনি বলুন যদিও এমন হয় যে তোমাদের বাপ দাদারা কিছুই বুঝতো না এবং তারা সঠিক পথে ছিলো না। (সূরা বাকারা-১৭০)
এই সকল বোকা লোকেরা এই আয়াতের সাথে পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করাকে তুলনা করে। তাদের দৃষ্টিতে মুশরিক পূর্বপূরুষদের অনুসরণ আর নেককার আস্থাভাজন পূর্ববর্তী ওলামায়ে দ্বীনের অনুসরণ একই পর্যায়ের (নাউযু বিল্লাহ)। একজন কৃষকের ছেলে যদি অসুস্থ হওয়ার পর বলে আমার বাবা যে ঔষধ খেতে বলে আমি তাই খাবো। আরেকজন বুদ্ধিমান লোক অসুস্থ হওয়ার পর যদি কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তারের নিকট গমন করে বলে, আপনি যে ঐষধ লিখবেন আমি তাই সেবন করবো। এই দুটি অনুসরণ কি সমান হলো?
ইমাম কুরতুবী রঃ বলেন, কিছু কিছু লোক এই আয়াত ব্যবহার করে তাকলীদের নিন্দা করে থাকে। যেহেতু আল্লাহ তায়ালা কাফিররা তাদের পূর্বপূরুষদের বাতিল চিন্তা দর্শনের তাকলীদ করেছিলো এটার নিন্দা করেছেন। পথভ্রষ্টতার ব্যাপারে এই নিন্দা ঠিকই আছে কিন্তু সত্যের ব্যাপারে কাউকে তাকলীদ করা দ্বীনের মূলনীতি সমূহের মধ্যে একটি এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য একমাত্র আশ্রয়স্থল। যারা গভীর চিন্তা ভাবনা করতে সক্ষম নয় তারা এটার উপর নির্ভর করে থাকে। (তাফসীরে কুরতুবী)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, জ্ঞান অর্জেনের জন্য মুমিনরা সকলে বের হয়ে পড়বে এটা অসম্ভব। তবে তাদের মধ্যে প্রতিটি দল হতে কিছু লোক কেনো দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য বের হয়ে যায় না যাতে করে তারা ফিরে এসে স্বীয় সম্প্রদায়কে ভয় প্রদর্শন করতে পারে যার ফলে তারা সতর্ক হবে। (সূরা তাওবা-১২২)
এই আয়াতে দুটি বিশেষ বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।
(ক) যারা জ্ঞান অর্জন করবেন অন্যান্যরা তাদের পথনির্দেশ অনুযায়ী আমল করবেন। উপরোক্ত আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যাতে তারা ফিরে এসে স্বীয় সম্প্রদায়কে ভয় প্রদর্শন করতে পারে যার ফলে তারা সতর্ক হবে। (সূরা তাওবা-১২২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা যদি না জানো তবে যারা জানে তাদের নিকট প্রশ্ন করো। (সূরা নাহল-৪৩)
একদল সাহাবী অভিযানে বের হলে তাদের মধ্যে একজন অসুস্থ ব্যাক্তির উপর গোসল ফরজ হয়। সে অন্যদের প্রশ্ন করে আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ আছে কি? তারা বলেন, পানি থাকা অবস্থায় আমরা তোমার জন্য কোনো সুযোগ দেখছি না। ফলে ঐ ব্যাক্তি গোসল করেন এবং অসুস্থতা বৃদ্ধি পেয়ে মারা যান। রসুলুল্লাহ সাঃ এই খবর শুনে বলেন,
আল্লাহর কসম এরাই তাকে হত্যা করেছে। যদি তাদের জানা না থাকে তবে অন্যকে প্রশ্ন করলো না কেনো। যে জানে না তার সমাধান হলো প্রশ্ন করা। (আবু-দাউদ, আলবানী হাসান বলেছেন)
নাসীহত বা কল্যাণ কামনার ব্যাখ্যায় ইমাম নাব্বী বলেন, আলেমদের কল্যাণ কামনার মধ্যে এটাও অন্তর্ভূক্ত যে তারা যা বর্ণনা করেন তা গ্রহণ করা, মাসয়ালা মাসাইলের ব্যাপারে তাদের তাকলীদ করা, তাদের ব্যাপারে সুধারণা রাখা ইত্যাদি। (শারহে মুসলিম)
যদি একজন ব্যক্তি দাড়িয়ে বলে, আমি ইমাম বুখারীকে চিনি না, ইমাম মুসলিমকে চিনি না। কে কোন হাদীস সহীহ বললো বা দূর্বল বললো এতে আমার যায় আসে না আমি নিজে যতদিন না সহীহ-জঈফ পার্থক্য করতে পারি ততদিন কোনো হাদীস মানতে বাধ্য নই। আমি কারো তাকলীদ করতে পারবো না। তবে এই ব্যাক্তির এই আচরণ কেমন হবে? এই ব্যক্তির এই কথা ইমাম বুখারীর সারা জীবনের চেষ্টা প্রচেষ্টাকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া নয় কি? একইভাবে অন্যান্য ফুকাহায়ে কিরাম ও আইম্মায়ে মুজতাহিদীনদের ফিকহী মতামতসমূহের ব্যাপারে যদি কেউ এই ধরণের নীতি অবলম্বন করে তবে সেটাও এই পর্যায়ের ধৃষ্টতা ও অবিচার বলে বিবেচিত হবে।
তবে দুটি স্থানে তাকলীদ চরম ঘৃণিত অপরাধ হিসাবে পরিগনিত হবে।
(ক) যে ব্যক্তিকে আল্লাহ কোরান হাদীস বুঝা ও দ্বীনের গভীর বিষয় সমূহ অনুধাবন করার যোগ্যতা দিয়েছেন যদি এই ব্যক্তি সত্য অনুধাবনের পরও তার বিপরীতে কোনো আলেম বা মুজতাহিদের কথা মেনে চলে তবে এটা মারাত্মক অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
তারা তাদের আলেম ও সন্যাসীদের আল্লাহর পরিবর্তে রব হিসাবে গ্রহণ করেছে। (সূরা তাওবা-৩১)
ইবনে তাইমিয়া বঃ বলেন, আল্লাহ তায়ালা তার রসুলকে যে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন সেটা স্পষ্টভাবে অনুধাবন করার পর যদি কেউ তা পরিত্যাগ করে প্রচলিত রীতিনীতিকে আকড়িয়ে ধরে থাকে তবে তার এই কাজ নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গন্য হবে। (মাজমুউল ফাতাই)
এখানে সত্য স্পষ্টভাবে বুঝে নেওয়া বলতে পূর্বে যা কিছু নিয়মনীতি বর্ণনা করা হয়েছে তার আলোকে সত্য অনুধাবন করা বুঝতে হবে। একটি আয়াত বা একটি হাদীস পাঠ করার পর সেটার আলোকে সমস্ত ওলামায়ে কিরামের মতামতকে পিছনে নিক্ষেপ করা নয়। সঠিক নীতিমালার আলোকে সত্য অনুধাবনের পর সেটা পরিত্যাগ করে কোনো ইমাম বা মুজতাহিদের অনুসরণ করা সঠিক নয়।
সতর্কতাঃ এখানে একটি বিষয় অবশ্যই গুরুত্বর সাথে লক্ষ করতে হবে। কোরআন হাদীস ও পূর্ববর্তী ওলামায়ে কিরামের মতামত ও কর্মপন্থার উপর চিন্তা-গবেষণা করে যদি কোনো গবেষকের নিকট সত্য প্রকাশিত হয় এবং তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারেন যে এ বিষয়ে বিরোধীপক্ষ ভ্রান্তির উপর আছে তবে তার জন্য উক্ত সত্যের অনুসরণ করা ফরজ হবে। কিন্তু তিনি যে বিষয়টিকে স্পষ্ট সত্য মনে করছেন যদি একদল গ্রহণযোগ্য ও আস্থাশীল আলেম ওলামা সেই মতটির বিপরীতে রায় দিয়ে থাকেন এবং তাদের মতটি ইজমার বিরুদ্ধে না যায় বা বিরল না হয় তবে ঐ সকল আলেম ওলামাদের তিরষ্কার করা যাবে না। কারণ এটা অসম্ভব নয় যে আমার নিকট যে বিষয়টি স্পষ্ট সত্য বলে মনে হচ্ছে বিভিন্ন কারণে অন্য কারো নিকট সেটা ভিন্নরকম মনে হতে পারে। জুনুবী অবস্থায় তায়াম্মুমের বিধান সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ এর সাথে আবু মূসা আল আশয়ারী রাঃ এর আলোচনায় আমরা বিষয়টি লক্ষ করেছি। আমরা দেখেছি কোরআনে উল্লেখিত স্পষ্ট বিধানের ব্যাপারে কিভাবে দুজন সাহাবীর মাঝে মতভেদ হয়েছে। এ বিষয়ে উমর রাঃ ও একই মতামত পোষণ করতেন। একথা বলা যায় না যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বা উমর রাঃ ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহর অবাধ্যতা করেছেন বা পাপ করেছেন। একইভাবে সম্পদ জমা করার ব্যাপারে আবু জর রাঃ এবং নিহত কাফিরের গনীমত হত্যাকারী মুসলিমকে দেওয়ার ব্যাপারে খালিদ রাঃ রসুলুল্লাহ সাঃ এর স্পষ্ট নির্দেশকে ভিন্নভাবে বুঝেছেন। এসকল ক্ষেত্রে তাদের মত পরিত্যাগ করা হবে কিন্তু এমন বলা যাবে না যে তারা পাপী বা অপরাধী। কেননা একজনের নিকট যা স্পষ্ট মনে হচ্ছে অন্যজন সেটাকে স্পষ্ট মনে নাও করতে পারেন। একইভাবে একজন ফকীহ্ যে সত্য অনুধাবণ করেছেন এবং সেটা সঠিক হওয়ার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছেন তিনি তার অধিনস্তদের এবং সুভাকাঙ্খীদের সেটা মেনে চলতে আদেশ করবেন, মানুষের মাঝে সেটা প্রচার করবেন কিন্তু যদি কোনো সাধারন মুসলিম তার কথা পরিত্যাগ করে অন্য একদল আস্থাশীল আলেম যে ফতওয়া দিয়েছেন সেটার তাকলীদ করে তবে তাকে পথভ্রষ্ট বা অপরাধী বলতে পারবেন না। কেননা সাধারন মানুষেরা তো দলীল প্রমানের প্রকৃত অর্থ বুঝতে সক্ষম নয়। কোরআন-হাদীসের উপর চিন্তা গবেষণা করে কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল তা নির্ণয় করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। তারা যে কোনো একজন আস্থাশীল আলেমের ফতওয়া অনুযায়ী চলবেন এটাই স্বাভাবিক। তারা যদি যাচায় বাছায় করে তাকওয়া ও জ্ঞানের মানদন্ডে আস্থাভাজন প্রমানিত হয় এমন একজন আলেমের ফতওয়া মান্য করেন তবে উক্ত আলেমের ভুলের কারণে তাদের পাকড়াও করা হবে না। এমনকি যদি উক্ত আলেম ইচ্ছাকৃত ভুল ফতওয়া দেয় তবুও কেবল সে অপরাধী হবে যে তার নিকট ফতওয়া প্রার্থনা করলো সে নয়। রসুলুল্লাহ সাঃ বলেন,
যখন কারো নিকট কেউ ফতওয়া চায় আর সে জ্ঞান ছাড়া ফতওয়া দেয় তবে তার পাপ যে ফতওয়া দিলো তার উপর বর্তাবে। (আবু দাউদ: আলবানী হাসান বলেছেন)
আর যদি উক্ত আলেম সঠিক মূলনীতির উপর টিকে থেকে চিন্তা-গবেষণা বা ইজতিহাদ করে ফতওয়া দেন এবং অনিচ্ছাকৃত ভুলের মধ্যে নিপতিত হন তবে তিনিও যেমন দোষী হবেন না তার অনুসারীরাও দোষী হবে না। যদি না তিনি ইজমার বিরুদ্ধে রায় দেন বা কোরআন-হাদীস হতে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী ওলামায়ে কিরামের মতামতকে উপেক্ষা করেন। সে ক্ষেত্রে তিনি মারাকত্মক অপরাধী হবেন এবং তার অবস্থা সম্পর্কে জানার পর যারা তার অনুসরণ করবে তারাও দোষী হবে। কারণ এই ব্যাক্তির জ্ঞান অর্জনের পথ সঠিক নয়। এ বিষয়ে খারেজীদের উদাহরণই যথেষ্ট মনে করি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে কোরআন ও হাদীসের বিরুদ্ধাচরণ করতে চেয়েছিল এমন নয় বরং কোরআন হাদীস বোঝার ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কিরামের মতামতকে উপেক্ষা করার কারণেই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছিল।
(খ) যদি কোনো সাধারণ মুসলিম এমন কোনো আলেমের ফতওয়া মেনে চলে যিনি জ্ঞান বা তাকওয়ার দিক হতে আস্থাশীল নন তবে এই ক্ষেত্রে উক্ত সাধারন মুসলিম অপরাধী সাব্যস্ত হবে। রসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, যখন কোনো আলেম অবশিষ্ট থাকবে না তখন মানুষ অজ্ঞ লোকদের নিজেদের নেতা বানিয়ে নেবে তারা তাদের নিকট ফতওয়া জিজ্ঞাসা করবে আর তারা জ্ঞান ছাড়াই সেগুলোর উত্তর দেবে ফলে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে। (সহীহ বুখারী)
উপরের হাদীসে আমরা দেখেছি যিনি ভুল ফতওয়া দিচ্ছেন কেবল তিনি দোষী হচ্ছেন ফতওয়া প্রার্থী নয়। আর এই হাদীসে আমরা দেখছি যে ফতওয়া দিচ্ছে আর যে ফতওয়া অনুসারে আমল করছে উভয়ে দোষী সাব্যস্ত হচ্ছে। এখানে পার্থক্য হলো প্রথম ক্ষেত্রে ফতওয়াপ্রার্থী চিন্তা-গবেষণা করে যাকে যোগ্য ও আস্থাশীল মনে হয়েছে তার নিকট ফতওয়া প্রার্থণা করেছেন ফলে ভুল ভ্রান্তির ভার তার উপর অর্পিত হয়নি। কারণ তিনি তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ফতওয়াপ্রার্থী অজ্ঞ লোককে নিজের নেতা বানিয়েছে এবং তার নিকট ফতওয়া প্রার্থণা করেছে ফলে ফতওয়া প্রার্থী ও ফতওয়া দাতা উভয়ে দোষী হয়েছে।
একজন মুসলিমের উপর দায়িত্ব হলো নিজের দ্বীন ও ঈমানের ব্যাপারে এমন কারো নিকট শরনাপন্ন হওয়া যিনি জ্ঞান ও তাকওয়ার মানদন্ডে উত্তীর্ণ। যে সকল আলেম ওলামারা রাজা বাদশাদের দরবারে যাওয়া আসা করে এবং তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য ফতওয়া দিয়ে থাকে তাদের ফতওয়া অনুযায়ী আমল করা যেতে পারে না। একইভাবে যে ব্যক্তি ফতওয়া দেওয়ার ব্যাপারে সঠিক মূলনীতির অনুসরণ করে না যেমন ইজমা অস্বীকার করে বা বিরল মতের অনুসরণ করে তবে এই ব্যক্তির ফতওয়াও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
তোমরা কেবল তাদের অনুসরণ করো যারা তোমাদের নিকট প্রতিদান চাই না এবং তারা সঠিক পথে আছে। (সূরা ইয়াসীন-২১)
একজন আলোমের দুটি গুণ থাকতে হবে। প্রথমত তাকে তাকওয়াবান হতে হবে যাতে দুনিয়ার লোভে রাজা-বাদশা বা ধনী ও প্রভাবশালীদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভুল ফতওয়া দেওয়ার আশঙ্কা না থাকে। দ্বিতীয়ত তাকে তাকওয়াবান হওয়ার সাথে সাথে ফতওয়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক মূলনীতির অনুসরণ করতে হবে। তিনি যদি সাহাবায়ে কিরাম ও পূর্ববর্তী আইম্মায়ে মুজতাহিদীনকে উপেক্ষা করে মতামত ব্যক্ত করতে চান তবে তাকে অনুসরণ করা যাবে না যেহেতু তিনি নিজেই একজন বিদয়াতী এবং তার মতামত কেবল নতুন বিদয়াত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।
সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ সাধারণ মানুষের জন্য তাকলীদ