শাবানের রাতের নিষিদ্ধ কর্মসমূহ – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
শাবানের রাতের নিষিদ্ধ কর্মসমূহ – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর লায়লাতুল বারায়াত গ্রন্থ হতে তুলে ধরা হয়েছে এছাড়াও শায়েখের বিভিন্ন গ্রন্থ পাবেন আমাদের সাইটে।
বাহরুর রায়েকে বলা হয়েছে, লাইলাতুল বারায়াতে রাস্তা ও বাজার বা মসজিদ সমূহ বাতি দ্বারা শোভিত করা বিদআত। ইমাম আন-নাব্বী বলেন,
বছরের কিছু বিশেষ রাতে যেমন শাবান মাসের মাঝ রাতে বিভিন্ন এলাকাতে বড় বড় ব্যায়বহুল বাতি প্রজ্বলিত করা হয় এটা নিকৃষ্ট বিদআত সমূহের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। কেননা এর মধ্যে বহু অপ্রিতীকর বিষয় রয়েছে। যথা মাজুসীদের মতো আগুনকে অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়া, অকারণে সম্পদ ব্যায় করা। তাছাড়া এই বিষয়কে কেন্দ্র করে ছোট ছেলে মেয়ে ও কুপ্রকিতির লোকেরা মসজিদে একত্রিত হয় এবং খেল তামাশা করে ও হৈ চৈ করে। এভাবে তারা মসজিদের সম্মান বিনষ্ট করে, মসজিদ নোংরা হয় ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষতিকর কাজ একত্রে ঘটে যার কোনো একটি হতেও মসজিদকে পবিত্র রাখা উচিত ছিল। (আল মাজুম)
তিরমিযীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ তুহফাতুল আহওয়াযীতেও অনুরুপ বলা হয়েছে। ইবনে তাইমিয়া বলেন,
নির্দিষ্টভাবে শাবান মাসের মাঝ রাতের পরদিন সওম পালন করার কোনো ভিত্তি নেই বরং একাজ অপছন্দনীয়। একইভাবে এই দিবসকে উৎসবের দিন মনে করে খাবার তৈরী করা বা সাজ সজ্জা করা ভিত্তিহীন বিদআতী উৎসব সমুহের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। (ইক্তিদাউস সিরাতিল মুস্তাকীম)
কোনো কোনো এলাকাতে হালুয়া রুটির প্রচলন আছে। এটাও ইবনে তাইমিয়ার কথার মধ্যে পড়ে। কেউ কেউ বলেন এ মাসে রসুলুল্লাহ সাঃ উহুদুরে যুদ্ধে আহত হন এবং তার দাত ভেঙ্গে যায় ফলে তিনি অন্যান্য খাবারের পরিবর্তে হালুয়া রুটি খেতেন তাই এ দিনে হালুয়া রুটি খাওয়া সুন্নাত। এ কথার কোনো ভিত্তি নেই বরং উহুদের যুদ্ধ হয়েছিল শবে বারাতের প্রায় দুই মাস পর শাওয়াল মাসের ৭ তারিখ মতান্তরে ১১ তারিখ। ইবনে ইসহাক বলেন,
কাফিররা রসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে উহুদে যুদ্ধ করতে আসে তৃতীয় হিজরীর শাওয়াল মাসে। (ইবনে হিশাম, আর রাহীকুল মুখতুম)
খুশির কথা হলো এসব বিষয়ে আলেম ওলামারা জনসাধারণকে সতর্ক করে থাকেন। একারণে ক্রমে এগুলো বিলুপ্ত হতে শুরু করেছে। শুধু শাবান মাসের ১০০ রাকাত সলাতের ব্যাপারে এখনও বহু আলেম ওলামা বেখবর রয়েছেন আশা করি ক্রমে এবিষয়টিও বিলুপ্ত হবে।
শাবানের রাতের নিষিদ্ধ কর্মসমূহ শাবানের রাতের নিষিদ্ধ কর্মসমূহ