ব্যক্তি বাধ্য হয়ে কুফরীতে লিপ্ত ব্যক্তির দুনিয়াতে বিধান – আব্দুল্লাহ আল মুনীর
ব্যক্তি বাধ্য হয়ে কুফরীতে লিপ্ত ব্যক্তির দুনিয়াতে বিধান – আব্দুল্লাহ আল মুনীর এর তাওহীদ আর রহমান গ্রন্থ হতে হুবহু সংকলন করা হয়েছে
সমস্ত ওলামায়ে দ্বীন একমত হয়েছেন যে, বাধ্য হয়ে কুফরীতে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে কেউ কাফির হবে না। আখিরাতে আল্লাহর নিকট ঐ ব্যক্তি কাফির হিসেবে গণ্য না হওয়ার ব্যাপারে সকল আলেম একমত হয়েছেন। একইভাবে দুনিয়ার যাবতীয় বিধানে তাকে কাফির হিসেবে গণ্য না করার ব্যাপারেও আলেমরা একমত হয়েছেন। কেবল ইমাম মুহাম্মদ রঃ থেকে এ বিষয়ে দ্বিমত উল্লেখিত আছে।
ইমাম কুরতুবী রঃ বলেন, আলেমরা ইজমা করেছেন যে, যদি মুশরিকরা কাউকে হত্যার ভয় দেখিয়ে কুফরী করতে বাধ্য করার কারণে সে কুফরীতে লিপ্ত হয় কিন্তু তার অন্তর ঈমানের উপর দৃঢ় থাকে তবে তার কোনো পাপ হবে না। তার স্ত্রী তালাক হবে না এবং তার উপর কুফরীর কোনো বিধান প্রয়োগ করা হবে না। ইমাম মালিক, কুফাবাসী (হানাফী মাজহাবের আলেমগণ), ইমাম শাফেঈ প্রমুখ আলেমদের মত এটাই। কেবল ইমাম মুহাম্মদ এ বিষয়ে দ্বিমত করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি কেউ (বাধ্য হয়ে) শিরক-কুফরে লিপ্ত হয় তবে আল্লাহর নিকট সে মুসলিম হিসেবেই গণ্য হবে কিন্তু বাহ্যিক ভাবে (দুনিয়ার বিধানে) সে কাফির হিসেবেই গণ্য হবে। তার স্ত্রী তালাক হবে, যদি সে ঐ অবস্থায় মারা যায় তবে তার জানাযার সলাত আদায় করা হবে না তার বাবা যদি মুসলিম অবস্থায় মারা যায় তবে সে তার ওয়ারিস হবে না। এই মতটি কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত। যেহেতু আল্লাহ্ বলেন, যে বাধ্য হয়ে হয় সে (অপরাধী) নয়। (তাফসীরে কুরতুবী)
মোট কথা, ওলামায়ে কিরাম যে বাধ্য হয়ে কুফরী করে তাকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় বিধানে ওযর প্রদান করেছেন। ইমাম মুহাম্মদ থেকে এ বিষয়ে যে মত বর্ণিত আছে তা একটি বিরল মত। হানাফী মাজহাবের ওলামায়ে কিরামের নিকটেও তার এ মত গ্রহণযোগ্য নয়। একারণে আলেমরা এ প্রসঙ্গে ইমাম মুহাম্মাদের মতটি ধার্তব্য করেননি। এমনকি তাদের কেউ কেউ এই মতটি উল্লেখ না করেই এ বিষয়ে ইজমা উল্লেখ করেছেন।
ইবনে বাত্তাল বলেন, আলেমরা ইজমা করেছেন যে, যদি মুশরিকরা কাউকে মুখে কুফরী কথা উচ্চারণ করতে বাধ্য করে কিন্তু তার অন্তর ঈমানে পরিপূর্ণ থাকে এবং তার কোনো মুসলিম স্ত্রী থাকে তবে উক্ত স্ত্রী তার উপর হারাম হবে না আর সে মুরতাদও হবে না। (শারহে বুখারী)
ব্যক্তি বাধ্য হয়ে কুফরীতে লিপ্ত