বাধ্য হয়ে কুফরী করা বা ইকরাহ্ (اإلكراه) শব্দের অর্থ – শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
বাধ্য হয়ে কুফরী করা বা ইকরাহ্ (اإلكراه) শব্দের অর্থ
ইকরাহ্ শব্দের অর্থ বাধ্য করা। যদি কেউ বাধ্য হয়ে কুফরী করে তবে সে কাফির হবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে কেউ ঈমান আনার পর কুফরী করে, যদি বাধ্য হয়ে কুফরী করে কিন্তু তার অন্তর ঈমানে পরিপূর্ণ থাকে তবে ভিন্ন কথা কিন্তু যদি কুফরীর প্রতি তার অন্তর প্রশস্ত হয় তবে সে আল্লাহর ক্রোধ ও ভীষণ শাস্তিতে পতিত হবে। (সুরা নাহল-১০৬)
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, আল্লাহ আমার উম্মাতকে ভুলে যাওয়া বা ভুলক্রমে ঘটে যাওয়া ঘটনার কারণে পাকড়াও করবেন না। যে কাজ তারা বাধ্য হয়ে করে সে বিষয়েও তাদের পাকড়াও করা হবে না। (ইবনে মাযা)
আবু বকর ইবনে আরাবী আল-মালেকী রঃ বলেন, এই হাদীসটির সনদ যদিও সহীহ্ নয় তবে এর মূলভাব সঠিক হওয়ার ব্যাপারে ওলামায়ে কিরাম একমত হয়েছেন। তবে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় তারা দ্বিমত করেছেন। (আহকামুল কুরআন)
ইমাম কুরতুবী রঃ ইবনুল আরাবীর এই কথা উল্লেখের পর বলেন, কাজি আবু বকর ইবনে আরাবী এমনটি বলেছেন তবে মুহাম্মাদ আব্দুল হক বলেছেন এর সনদ সহীহ্। উপরে আমরা ইবনে হাযার আসক্বলানী, ইমাম নাব্বী প্রমুখ ওলামায়ে কিরাম থেকে উল্লেখ করেছি যে তারা হাদিসটিকে সহীহ্ বলেছেন।
মোট কথা, হাদীসটির সনদ সহীহ্ কি না সে বিষয়ে কিছু দ্বিমত থাকলেও উপরোক্ত আয়াত ও অন্যান্য হাদীসের কারণে ওলামায়ে কিরাম যে ব্যক্তি বাধ্য হয়ে কুফরীতে লিপ্ত হয় তাকে ওযর দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। তবে বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ তারা দ্বিমত করেছেন। এই সকল মতপার্থক্যপূর্ণ বিষয়াবলী দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। এক. বাধ্যতা কোন ক্ষেত্রে ওযর হিসেবে গণ্য হবে সে বিষয়ে মতাপার্থক্য এবং দুই. কোন বিষয়কে বাধ্যতা বলে গণ্য করা হবে সে বিষয়ে মতপার্থক্য। আমরা এই সকল মতপার্থক্য এবং দলিল-প্রমাণ ও ওলামায়ে কিরামের মতামতের আলোকে সঠিক মত কোনটি তা নিম্নোক্ত আলোচনাতে বর্ণনা করবো। ইনশাআল্লাহ।
কোন ক্ষেত্রে বাধ্যতাকে ওযর হিসেবে গণ্য করা হবে সে বিষয়ে মতাপার্থক্য।
সাধারনভাবে বাধ্যতার কারণে কুফরী করা বৈধ হয় এটা স্বীকার করে নেওয়ার পর এটা কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে সে ব্যাপারে কিছু দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তী পোষ্টে এ বিষয়ে আলেমদের মতামত তুলে ধরা হলো।
বাধ্য হয়ে কুফরী করা