পরকালের পথে যাত্রা পর্ব- ১৮। জাহান্নামের বাসিন্দা। অডিও সিরিজ ডাউনলোড করুন
দু’ শ্রেণীর মানুষ চিরকাল জাহান্নামের আযাবপ্রাপ্ত হবে । এ’দু শ্রেনী হল মুনাফিক আর কাফের। এই আযাব সাময়িক সময়ের জন্য কিংবা ক্ষণস্থায়ী নয় , এক মিলিয়ন বা বিলিয়ন বছরের নয় বরং এ দু’ শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামে চিরকালের জন্য থাকবে যে আযাবের শুরু আছে তবে শেষ নেই। আল্লাহ সুবহানাওয়াতায়ালা বলেন
“ আর যারা কুফরী করবে ও আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করবে, তারাই জাহান্নামী;সেখানে তারা চিরকাল থাকবে”। (সুরা বাকারাহঃ ৩৯ )
একটা চিন্তা আমার মাথায় উকি দিত, কিভাবে একজন ৬০/৭০ বছরের পাপের জন্য চিরকালের জন্য আযাব ভোগ করবে ! কেন তারা দুনিয়াতে যতটুক সময় অতিবাহিত করেছে ঠিক ততটুক সময়ের জন্যই কেবল শাস্তি পাবে না ?
মত্যু বলে কয়ে আসে না, হঠাৎ করে আসে। তাই চিন্তা করুন যে লোকটি ৬০ বছর ধরে বেঁচে আছে সে এখনো কুফরী করছে ৬১ বছর পরেও কুফরী করে চলেছে । সে ৬৫ বছর পরেও কুফরী করে চলেছে, ব্যাপারটা এরকম যে সে যদি চিরকাল বেঁচে থাকে সে কুফরের উপরেই থাকবে। কারণ সে নিয়্যতই করেছে চিরকাল কুফরি করার, তাই সে চিরকাল শাস্তি ভোগ করবে। সুতরাং নিয়্যত খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিষয়।
এবার মুনফিকদের ব্যাপারে আসা যাক। যারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাস্তি ভোগ করবে তারা হল মুনাফিক। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন,
“মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে,” (সুরা নিসাঃ১৪৫)
আর সর্বনিম্নস্তর হল নিকৃষ্টতম । মুনাফিকদের অবস্থা কাফেরদের চেয়ে ভয়াবহ হবে কারণ তাদের কুফরির পাশাপাশি প্রতারণা আর মিথ্যার মত খারাপ গুণগুলো রয়েছে। আর তারা সত্যের খুব নিকটে থাকে, তারা তা ভালোভাবে জানে । ঈমান আনার ভান ধরলেও তারা সত্য অস্বীকার(কুফরী) করে । তাই মুনাফিকদের অবস্থা কাফেরদের চেয়ে ভয়াবহ হবে। কুফফাররদের চেয়ে মুনাফিকরা উম্মাহর বেশী ক্ষতি সাধন করেছে। আল্লাহ সুবহানাওয়াতায়ালা কুরআনে মুনাফিকদের ব্যাপারে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। কারণ কুফফাররা প্রকাশ্যে খোলামেলা মুসলিমদের বিপক্ষে দাঁড়ায়। আর এই মুনাফিকরা উম্মাহর বিরুদ্ধে গোপন ও প্রতারণামূলক চক্রান্তের নকশা আঁকে। আমরা প্রথম যুগের মুসলিমদের অভ্যন্তরীন বড় ফিতনাসমুহর দিকে তাকালে দেখতে পাই যেএসবের পেছনে মুনাফিকদেরই হাত ছিল। এমনকি এই মুনাফিকরা মদিনাতেও রাসুলুল্লাহ (সা) কে সবচেয়ে বেশী বিপদের সম্মুখীন করেছিল যারা কিনা একসাথে মদিনাতেই বসবাস করত!