কথা কাজে কুফরীর পার্থক্য বা বাধ্য হওয়ার ক্ষেত্রে কথা ও কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কিনা।
কথা কাজে কুফরীর পার্থক্য বা বাধ্য হওয়ার ক্ষেত্রে কথা ও কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কিনা শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মূনীর
ইমাম কুরতুবী রঃ বলেন,
একদল আলেম বলেছেন, বাধ্য হওয়ার ওযর কেবল কথার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কাজের ক্ষেত্রে নয়। যেমন, যদি কাউকে মূর্তির সামনে সাজদা করতে বা কিবলার বিপরতি দিকে মুখ করে সলাত আদায় করতে আদেশ করা হয়।
এরপর তিনি বলেন, এটা হাসান বসরী, আওয়াঈ ও আমাদের মাজহাবের আলেমদের মধ্যে সাহনুনের মত। (তাফসীরে কুরতুবী)
ইবনে বাত্তাল রঃ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় একই কথা বলেছেন।
ইবনে হাযার আসক্বালানী রঃ বলেন, বাধ্যতা ওযর হওয়ার ক্ষেত্রে কথা বা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এটিই জমহুর (বেশির ভাগ) আলেমের মত। (ফাতহুল বারী)
এ বিষয়ে ইবনে হাযার আসক্বালানী রঃ বেশিরভাগ আলেম থেকে যে মত বর্ণনা করেছেন সেটিই সঠিক। যেহেতু পরিবত্র কুরআনে সাধারনভাবে বাধ্য হয়ে কুফরী করার ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেখানে কথা বা কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। তাছাড়া মুখে কুফরীর স্বীকৃতি দেওয়া আর কুফরী কাজে লিপ্ত হওয়ার মধ্যে এমন কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় যে কারণে একটিকে অন্যটি হতে আলাদা মনে করা যায়। কিন্তু যদি এখানে কাজ বলতে এমন কাজ বোঝায় যাতে কারো হক চিরস্থায়ীভাবে নষ্ট হয় যেমন কাউকে হত্যা করা, কারো হাত-পা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করা, কোনো নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করা ইত্যাদি তবে সে ক্ষেত্রে ইকরাহ্ প্রযোজ্য না হওয়ার ব্যাপারে সকল ওলামায়ে কিরাম একমত হয়েছেন।
ইমাম কুরতুবী রঃ বলেন, আলেমরা একমত হয়েছেন যে, যদি কাউকে অন্য একজন ব্যক্তিকে হত্যা করতে বাধ্য করা হয় তবে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করা বা তাকে প্রহার করা বা অন্য কোনো ভাবে অপদস্ত করা তার জন্য বৈধ হবে না। বরং নিজের উপর আপতিত কষ্টের উপর ধৈর্য্য অবলম্বন করতে হবে। কারো জন্য বৈধ নয় যে, সে অন্য কারো ক্ষতি করে নিজেকে মুক্ত করবে। (তাফসীরে কুরতুবী) বাধ্য হয়ে অন্য কারো এমন কোনো ক্ষতি করা যাবে না যার ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব নয়। এর বিনিময়ে যে কোনো বিপদ-আপদ সহ্য করতে হবে। এ ব্যাপারে আলেমরা একমত।